কুমিল্লায় প্রতারণার মামলায় জেল থেকে বের হয়ে এবার অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় গ্রেফতার- ৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:
মাত্র কয়েক দিন আগের কথা, কখনো সাংবাদিক, আবার কখনো নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ব্লাকমেইল করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মতো কাজ করে আসছিলেন কুমিল্লায় কয়েকটি প্রতারক চক্র। কথায় আছে চোরের দশ দিন তো গেরস্তের একদিন। চলতি বছরের গত ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে নগরীর পুরাতন চৌধুরীপাড়া (০৫ ওয়ার্ড) এলাকায় ৩ প্রতারক পুলিশ পরিচয়ে একটি ভাড়া বাসায় জোরপূর্বক প্রবেশ করে এক গৃহকর্ত্রীর বাসায়। এরপর ওই গৃহকর্ত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করতে চেষ্টা করে এই প্রতারক চক্রটি। এসময় চিৎকার করলে এগিয়ে আসেন ওই গৃহকর্ত্রীর মেয়ে আসিফা ও স্বামী কবির আহমেদ (ছদ্মনাম)। এসময় চক্রটি ওই নারীকে ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পরিবারের ওপর চালায় শারীরিক নির্যাতন। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টাও করে ওই গৃহকর্ত্রীকে। একপযায়ে ভুক্তভোগীর পরিবার ৯৯৯ জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন দিলে পুলিশ এসে দুই প্রতারক কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানাধীন বিজয়পাড়া গ্রামের মৃত রৌশন আলীর ছেলে আব্দুর রহমান (৫০) ও কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কাপ্তানবাজার এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ এর ছেলে মশিউর রহমান উরফে টিপু (৪৫) কে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় থানা পুলিশ। এসময় জাবেদ নামে অপর আরেক প্রতারক সঙ্গী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ঘটনার রেস কাটতে না কাটতেই গত ২৮ মাচ বিকেলে সুমন (৩৪) নামে এক ব্যক্তি কোতোয়ালি মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে জানান যে, কোতয়ালি মডেল থানাধীন
০২নং উত্তর দূর্গাপুর ইউনিয়নের আলেখারচর (দক্ষিন পাড়া, গাজী বাড়ী) এলাকার আবুল হাশেম এর ছেলে ও তার ভাই আলাউদ্দিন কাতার যাওয়ার জন্য ওই দিন বেলা অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় তার নিজ বাসা হতে রেইসকোর্স সাকিনস্থ প্রবাসী জনশক্তি অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার জন্য বাহির হইলে অজ্ঞাত পরিচয়ে তাকে অপহরণ পূর্বক আটকে রেখে আটক ব্যক্তির নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন প্রকার হুমকি ধমকী দিয়ে ১,০০,০০০/-(এক লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে এবং চাঁদা না দিলে ভিকটিমের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাইয়া দিবে বলে হুমকী দেয়। বিষয়টি কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান কে জানানো হলে তিনি কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আটক রাখার স্থান সনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে ভুক্তভোগী আলাউদ্দিনকে রাত সাড়ে ১০টার সময় উত্তর রেইসকোর্স এলাকার ধানমন্ডি রোড (বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মজুমদার এর মাজেদা কুটির নামীয় ৬ তলা বিল্ডিং এর ৪র্থ তলার ভাড়াটিয়ার বাসা থেকে উদ্ধার করে ঘটনায় জরিত থাকার অপরাধে চক্রের দুই নারী এবং একজন পুরুষ সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ৩ প্রতারক হলো-
কুমিল্লা কোতয়াল মডেল থানাধীন কাপ্তানবাজার
(বেপারী পুকুর পাড়, বড় বাড়ী) এলাকার মৃত আব্দুর রশিদ ও
ফাতেমা বেগম এর ছেলে মশিউর রহমান উরফে টিপু(৪৫), ব্রাহ্মনপাড়া থানাধীন চারিপাড়া (উত্তর পাড়া, হারুন মেম্বারের বাড়ী) এলাকার মৃত শানু মিয়া ও মৃত হাসেনা বেগম এর মেয়ে পারভীন আক্তার উরফে হুমায়রা(২৮), ধান্যদৌল (কাজী বাড়ী) এলাকার কবির আহমদ এর স্তী শাহেনা বেগম (৩৮)। কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ আহমেদ জানান, আটককৃত ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যক্তিকে টার্গেট করে প্রলোভনের মাধ্যমে নিজেদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে ভয় ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে আসছিলো। আজকের এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে থানায় প্রতারণামূলক চাঁদাবাজির মামলা দায়ের হয়েছে।