জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধিরর ধর্মঘট.. দিশেহারা জনগণ
আজগর হোসেন শাহীন) (কুমিল্লা)
সরকার আরেক ধাপ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি করার কারণে সারাদেশে চলবে শনিবার হতে বাস, ট্রাক্ট,মালিক পরিবহণ সমিতির পক্ষ হতে একডাকে চলবে ধর্মঘট,
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সাথে সাথেই সকল পরিবহন মালিক সমিতি নতুন করে ভাড়া পুনঃনির্ধারন না করা পর্যন্ত গাড়ি বন্ধের ঘোষনা দিয়েছে। বাস ট্রাক,মালিক সমিতির পরিবহন ধর্মঘট বিচ্ছিন্নভাবে পালন হচ্ছে। পরে তারা হয়ত আরো বড় কর্মসূচী দিবে।
তেলের দাম বাড়ানোর কারন অর্থনীতির ভাষায় মূলত দুটি কারনে হয়। এক চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া আর দুই তেলের যোগানে যদি ঘাটতি দেখা দেয়। আরো অনেক কারন থাকতে পারে। তবে এই দুইটিই মূল কারন।
তেলের চাহিদা বৃদ্ধি হয় যদি উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান শিল্পায়ন এবং নগরায়ন চলতে থাকে। আর অপরদিকে তেলের যোগান কমা বা বৃদ্ধি নির্ভর করে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর নানা কর্মকান্ডের উপর। এছাড়াও যুদ্ধ বিগ্রহ, উৎপাদনে ত্রুটি, মজুদ, উন্নত দেশের প্রভাব ইত্যাদিও কারন।
তেলের দাম বৃদ্ধি একদিকে যেমন inflation কে বাড়ায় অপরদিকে ইকনোমিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করে। এই ব্যাহত নানা মাধ্যমে হয়ে থাকে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রয় ক্ষমতা কমে আসে, পণ্যদ্রব্যের চাহিদা যোগানে সমস্যা হয়, বেকারত্ব বৃদ্ধি পায়। এমন নানা স্তর পার হয়ে এসে তার প্রভাব পড়ে Economic Growth এর উপর।
সামগ্রিকভাবে চিন্তা করলে তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে যে সকল পণ্যদ্রব্য ও সেবা তেলের মাধ্যমে উৎপাদিত ও সম্পাদিত হয় সেগুলোর দাম বেড়ে যায়। এটা তেলের দাম বাড়ার সরাসরি প্রভাব। পরোক্ষ আরো নানা প্রভাব অর্থনীতিতে পড়ে। এই বাড়তি খরচ মালিক পক্ষ ভোক্তাদের উপর চাপিয়ে দিতে চায়। এইভাবেই দ্রব্যমূল্যের গড় দাম বৃদ্ধি পায়।
তেলের দাম বাড়লে যদি এতই ক্ষতি হয় তাহলে কেন সরকার তেলের দাম বাড়ায়। কারন আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বৃদ্ধির কারনে Bangladesh petrolium Corporation (BPC) দাম বাড়ায়। এই দাম না বাড়ালে BPC’র প্রতিদিন ২০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। ইতিমধ্যে ভারতও তেলের দাম এডজাস্ট করেছে। সেখানে প্রতি লিটারের মূল্য বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১২৫ টাকা। অনেকেই মনে করে এই দাম যদি বাংলাদেশ ভারতের সাথে মিল না রাখে তাহলে এইদেশ থেকে তেল বেশি দামের আশায় অবৈধ পথে পাচারও হতে পারে। সরকারের হাতে আরো নানা কারন থাকতে পারে এই মূল্যবৃদ্ধির।
তবে মুলকথা হলো তেলের দাম বাড়লে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের বেশি মুনাফা অর্জনের সুযোগ আসে। এই অজুহাতে সবকিছুর দাম বেড়ে যায়। আর তার প্রভাব পড়ে দিন আনে দিন খায় তাদের উপর। নির্দিষ্ট বেতনের কর্মচারীদের নাভিশ্বাস উঠে। দাবী উঠে বেতন বাড়ানোর। আবার বেতন বাড়লেও আরেক দফা দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ে। এই দাম বৃদ্ধি চক্র যেন চলতেই থাকে।
এই তেলের দাম বৃদ্ধির সরাসরি প্রভাব পড়ছে আমার উপর। কুমিল্লা থেকে কক্সবাজার এসে শনিবারে কুমিল্লা যাওয়ার টিকেট খুজতেছি। সবাই বলছে গাড়ি বন্ধ। এখন শনিবারে প্রাইভেট কারে যেতে হবে। ৮৫০ টাকার স্থলে গুনতে হবে মিনিমাম ১২০০০ টাকা।